20170211

দিশাহীন, ভাঁওতাসর্বস্ব, দেউলিয়া বাজেট: সূর্য মিশ্র





শুক্রবার বিধানসভায় তৃণমূল সরকারের পেশ করা ২০১৭-১৮ সালের রাজ্য বাজেট সম্পর্কে এক প্রতিক্রিয়ায় সি পি আই (এম) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সম্পাদক সূর্য মিশ্র বলেছেন:

‘‘একটা দিশাহীন, ভাঁওতাসর্বস্ব, দেউলিয়া বাজেট।

বেকার যুবক-যুবতীদের আগামীদিনে কর্মসংস্থান সম্পর্কে এই বাজেটে কোনও দিশাই দেখানো হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী যে কর্মসংস্থান করার এত হিসেব দেন, সেসব কোথায় গেলো? এটা স্পষ্ট, ওঁর প্রতিশ্রুতির কোনও মূল্য নেই। সবই ভাঁওতা।

চিট ফান্ড কেলেঙ্কারিতে লক্ষ লক্ষ আমানতকারীর লুটের টাকা উদ্ধার সম্পর্কেও কোনও কথা নেই এই বাজেটে।

আই সি ডি এস এবং আশা কর্মীদের ভাতা কিছুটা বাড়ানো হলেও তাঁদের অবসরের সময় এককালীন অনুদান দেওয়া এবং কাজের নিরাপত্তা সম্পর্কে, কর্মক্ষেত্রে যে আক্রমণ নেমে আসছে, সেগুলি মোকাবিলা করার কোনও কথা বলা হয়নি। ভাতা আংশিক বৃদ্ধি এই কর্মীদের ধারাবাহিক আন্দোলনের জয়। অন্যদিকে, অন্যান্য স্কিম ওয়ার্কাস বা প্রকল্পভিত্তিক কর্মীদের ভাতা বৃদ্ধি সম্পর্কে বাজেটে উচ্চবাচ্য করা হয়নি। প্যারা টিচার, এস এস কে, এম এস কে, সিভিক ভলান্টিয়ার্স ইত্যাদি কর্মীদের ভাতাবৃদ্ধি সম্পর্কে বাজেট নিশ্চুপ। বামফ্রন্ট সরকারের সময় যে সুবিধা এরা পেতেন, তা এখন পাচ্ছেন না। বামফ্রন্ট সরকার এই সমস্ত কর্মীদের কাজের নিরাপত্তা দিয়েছিল, ছাঁটাই না হওয়ার নিশ্চয়তা দিয়েছিল। একইসঙ্গে, নিয়মিত ভাতা বাড়ানো হচ্ছিলো। সেসব এখন হচ্ছে না।

রাজ্য সরকারী কর্মচারী, শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মচারীসহ অন্যান্য কর্মীদের যে বিপুল পরিমাণ মহার্ঘ ভাতা বকেয়া আছে, তার কী হলো? বাজেটে সে বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।
বামফ্রন্ট সরকার চলে যাওয়ার সময় রাজ্যের ওপর ঋণ ছিল ১লক্ষ ৮৬হাজার কোটি টাকা। কিন্তু শুধু তৃণমূল সরকারের আমলে মাত্র ৬বছরেই ঋণ নেওয়া হচ্ছে প্রায় দেড় লক্ষ কোটি টাকা। বাজেটের বাইরে এবং পরিকল্পনা-বহির্ভূত যে বিপুল পরিমাণ খরচ করা হচ্ছে, তার জন্যই এইভাবে বেপরোয়া ঋণ নেওয়া হচ্ছে।

কৃষকের ফসলের ন্যায্য দাম পাওয়ার জন্য ফসলের সহায়ক মূল্য নিশ্চিত করা, কৃষিবীমা সম্পর্কে কোনও উল্লেখই নেই এই বাজেটে। বন্ধ কল-কারখানা, বন্ধ চা বাগানের শ্রমিকদের জন্য কোনও কথা নেই। তফশিলী জাতি, আদিবাসী এবং সংখ্যালঘুদের কোনও দিশা দেখাতে পারেনি তৃণমূল সরকার। খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্পর্কেও কোনও বার্তা নেই।

আমরা এই বাজেটের তীব্র বিরোধিতা করছি।

শ্রমিক-কৃষক, বেকার যুবক-যুবতী, মহিলা, চিট ফান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত আমানতকারী, তফশিলী জাতি, আদিবাসী এবং সংখ্যালঘুদের স্বার্থে, তাঁদের দাবিগুলি নিয়ে আমাদের লড়াই জারি থাকবে।’’


১০ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭

No comments:

Post a Comment