20161017

পার্টির সাংগঠনিক রাজ্য প্লেনাম সম্পর্কে

ডা: সূর্যকান্ত মিশ্র
গত ২৭-৩১শে ডিসেম্বর ২০১৫, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-র সংগঠন সম্পর্কে কেন্দ্রীয় প্লেনাম কলকাতায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। কলকাতা প্লেনামের নির্দেশগুলি কার্যকর করার জন্য রাজ্যগুলিকে বার্ষিক পরিকল্পনা রচনার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ, কেরালা-সহ চারটি রাজ্যে নির্বাচনের কারণে এই রাজ্যগুলিকে বাড়তি সময় দেওয়া হয়েছে। তদনুযায়ী পার্টির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি ৩০শে সেপ্টেম্বর ও ১লা অক্টোবর রাজ্য প্লেনাম সংগঠিত করার সিদ্ধান্ত নেয়। অবশ্য তার আগে রাজ্য কমিটি যে খসড়া রিপোর্ট পেশ করে তা জেলা কমিটিগুলিতে আলোচনা ও সংযোজনী, সংশোধনী ইত্যাদির ভিত্তিতে রাজ্য প্লেনামের জন্য খসড়া রিপোর্ট প্রস্তুত করা হয়েছে। এই প্লেনামে রাজ্য কমিটির সদস্য ছাড়াও জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সকল সদস্য ও বিভিন্ন গণ-ফ্রন্টের রাজ্য স্তরের নেতৃত্ব অংশগ্রহণ করবেন। প্লেনামে আলোচনায় অংশগ্রহণ করা ছাড়াও তাঁদের সংশোধনী, সংযোজনী, প্রস্তাব, পরামর্শ ইত্যাদি অধিকার থাকবে। এছাড়া প্লেনামে পার্টি সংগঠন, আন্দোলন সংগ্রাম ও নভেম্বর বিপ্লবের শতবর্ষ উদযাপন সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলিও চূড়ান্ত করা হবে। রাজ্যের বিশেষ পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে আগামীদিনে আন্দোলন সংগ্রাম ও সংগঠন সম্পর্কে কলকাতা প্লেনামের নির্দেশগুলি বাস্তবায়নের নির্দিষ্ট সময়সীমাভিত্তিক রূপরেখা ও তার চেক-আপ সুনিশ্চিত করাই হল রাজ্য প্লেনামের মূল কাজ।

কলকাতা প্লেনামের মূল আহ্বান ছিল গণ-লাইনের ওপর ভিত্তি করে ভারতীয় জনগণের একটি বিপ্লবী পার্টি গঠনের কাজ ত্বরান্বিত করা। পশ্চিমবাংলার বিশেষ পরিস্থিতিতে এই দায়িত্ব পালন করতে হবে। পৃথিবীজুড়ে ৮বছর ব্যাপী অর্থনৈতিক সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে দক্ষিণপন্থী ও ফ্যাসিবাদী শক্তিগুলির উত্থানের বিপরীতে বামপন্থী ও গণতান্ত্রিক শক্তিগুলির প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ সংগঠিত হচ্ছে। আমাদের দেশে গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, অখণ্ডতা ও স্বাধীন বিদেশনীতির ওপর আক্রমণ তীব্রতর হচ্ছে। বেকারী, মূল্যবৃদ্ধি, কৃষি ও শিল্পক্ষেত্রে সংকট-সহ মানুষের জীবন-জীবিকার ওপর আঘাত বহুগুণ বেড়েছে। উগ্র, হিন্দুত্ববাদী সঙ্ঘ পরিবারের ফ্যাসিস্ট কায়দায় আক্রমণ, কাশ্মীর পরিস্থিতি, সীমান্তে উত্তেজনা ও যুদ্ধ উন্মাদনা সৃষ্টি ইত্যাদির মধ্য দিয়ে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের অপচেষ্টার মূল উদ্দেশ্য হল জনজীবনে জ্বলন্ত সমস্যাগুলির বিরুদ্ধে গণ-সংগ্রামগুলিকে বিপথে পরিচালিত করা। বলাবাহুল্য, প্রথম এন ডি এ সরকারের তুলনায় দ্বিতীয় এন ডি এ সরকারে বিজেপি-র একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা ও আর এস এস-র নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতাবৃদ্ধি স্বাধীনতার পরে এক নজিরবিহীন সংকটজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।

আমাদের রাজ্যে দ্বিতীয় তৃণমূল সরকারের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। ফ্যাসিস্টসুলভ আক্রমণ এখন চলতি বছরের মধ্যেই পশ্চিমবাংলাকে বিরোধীমুক্ত করার রূপ নিয়েছে। শিল্প-কৃষি-শিক্ষা-স্বাস্থ্য-সহ সমস্ত সামাজিক ও পরিষেবা ক্ষেত্রে সংকট গভীরতর হয়েছে। সারদা-নারদা-টেট-স্কুল সার্ভিস কমিশন, উড়ালপুল ভেঙে পড়ার কেলেঙ্কারি থেকে শুরু করে সিণ্ডিকেট রাজ ও তোলাবাজী দৌরাত্ম্য এখন শাসকদলের মধ্যেই দাঙ্গা ও খুনোখুনির রূপ নিয়েছে। এটা এখন স্পষ্ট সীমান্তের ওপার থেকে তাড়া খেয়ে জে এম বি-র সন্ত্রাসবাদীরা এখানে শাসকদল ও প্রশাসনের নিরাপদ আশ্রয় পেয়েছে। রাজ্যে আর এস এস-র কার্যকলাপও বহুগুণ বেড়েছে। এর অর্থ এই নয় রাজ্যে বা কেন্দ্রে ফ্যাসিবাদ কায়েম হয়েছে। কিন্তু এতে সন্দেহ নেই জরুরী অবস্থার একনায়কত্বের তুলনায় বর্তমান সময়ের বিপদের আশঙ্কা অনেক গভীর। একে আগাম প্রতিহত করার মতো আন্দোলন সংগ্রাম ও সংগঠন গড়ে তোলাই বাম ও গণতান্ত্রিক সংগ্রামের অগ্রবর্তী ঘাঁটি পশ্চিমবাংলার সামনে প্রধান চ্যালেঞ্জ। রাজ্য সাংগঠনিক প্লেনাম এই ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালনের জন্য সবরকম প্রস্তুতির আয়োজন করবে।

গণ-লাইন সম্পর্কে
একটি শক্তিশালী কমিউনিস্ট পার্টি গড়ে তোলার রাজনৈতিক সাংগঠনিক লাইনের মুখ্য উপাদান হিসেবে পার্টি গণ-লাইনের ওপর প্রধান গুরুত্ব আরোপ করেছে। আমাদের পার্টির গঠনতন্ত্রের ১১/১(চ) নং ধারায় পার্টি সভ্যদের কর্তব্য সম্পর্কে বলা হয়েছিল ‘‘নিষ্ঠা সহকারে জনগণের সেবা করতে হবে ও ধারাবাহিক জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক বন্ধন দৃঢ় করে তুলতে হবে। জনগণের কাছ থেকে শিক্ষা নিতে হবে এবং তাঁদের মতামত ও দাবিদাওয়া সম্পর্কে পার্টিকে অবহিত করতে হবে, অব্যাহতি না দেওয়া হলে প্রত্যেককেই পার্টির পরিচালনাধীনে কোনও না কোন গণসংগঠনে কাজ করতে হবে।’’ গণ-লাইনের অর্থ হল এই কথাগুলিকে গঠনতন্ত্রের যে কোনও একটা ধারা হিসেবে গণ্য না করে এখনকার মুখ্য কাজ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা।
ভেঙে বললে যা দাঁড়ায়: প্রথমত, জনগণের সেবা করতে হবে এবং নিষ্ঠার সঙ্গে তা করতে হবে। এর অর্থ তাঁদের কেবল সভা-সমাবেশে সমবেত করা নয়, দৈনন্দিন জীবনে তাঁদের সমস্যাগুলির নিরসনের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করা। শাস্ত্রে যেরকম বলা আছে উৎসবে, ব্যসনে, দুর্ভিক্ষে, রাষ্ট্রবিপ্লবে, রাজদ্বারে, শ্মশানে অর্থাৎ এককথায় মানুষের সুখে-দুঃখে সবসময় যে পাশে থাকে তাকেই বন্ধু বলে গণ্য করতে হবে। স্কুলে বা হাসপাতালে ভর্তি, রক্তদান, রেশন দোকান, একশো দিনের কাজ, ‘যুবশ্রী’, ‘কন্যাশ্রী’ ইত্যাদি ‘সুশ্রী-বিশ্রী’ যতরকম সমস্যা আসুক না কেন মানুষের সঙ্গে থেকেই কেবলমাত্র সেগুলির আংশিক সমাধানের মধ্য দিয়েই জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করা যায়। এছাড়া মনে রাখা দরকার পূর্বোক্ত শ্লোকের শুরু হচ্ছে ‘উৎসব’ শব্দটি দিয়ে। কেবল দুঃখ নয়, সুখেরও সাথী হতে হবে। কেবল পেটের ক্ষুধা নয়, মনের ক্ষুধাও মেটাতে হবে। তাই খেলাধূলা, সংস্কৃতি কর্মকাণ্ড-সহ নানারকম জীবনমুখী সামাজিক অনুষ্ঠানে যুক্তিবাদ বিসর্জন না দিয়েই আমাদের অংশগ্রহণ করতে হবে। 
দ্বিতীয়ত, এই কাজ ধারাবাহিকভাবে করতে হয়। বছরে দু-একবার যাওয়া-আসার মধ্য দিয়ে ‘জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক বন্ধন দৃঢ় করে’ তোলা যায় না। 
তৃতীয়ত, ‘জনগণের কাছ থেকে শিক্ষা নিতে হবে’। কেউ কেউ মনে করেন আমরা কেবল জনগণকে শিক্ষা দিতে পারি। অবশ্যই মতাদর্শ, রাজনীতি, সংগ্রাম সংগঠনে গুরুত্ব সম্পর্কে জনগণকে শিক্ষিত করে তোলা আমাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। কিন্তু এইসব বিষয় সম্পর্কে আমাদের শিক্ষা প্রয়োগ ছাড়া অসম্পূর্ণ থেকে যায়। প্রয়োগের অভিজ্ঞতায় শিক্ষা প্রতিদিন সমৃদ্ধ হয়। এবং সেই শিক্ষা জনগণের কাছ থেকেই অর্জন করতে হয়। তাঁদের কাছ থেকে আমরা জানতে পারি তাঁদের আশু সমস্যাগুলি কী? তা থেকে কোন কোন দাবি আংশিকভাবে হলেও আদায়ের সংগ্রাম গড়ে তোলা যায়। সেই সংগ্রামগুলি পরিচালনার অভিজ্ঞতা থেকে জনগণ ও আমরা উভয়েই শিক্ষা গ্রহণ করি। ছোট ছোট এরকম অসংখ্য সংগ্রামগুলিকে মূল দাবি আদায়ের সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত না করতে পারলে এক পা-ও এগোন সম্ভব নয়।
চতুর্থত, এইসব সংগ্রামের অভিজ্ঞতা থেকে জনগণের ‘মতামত ও দাবিদাওয়া সম্পর্কে পার্টিকে অবহিত করতে হবে’। প্লেনাম যাই সিদ্ধান্ত নিক না কেন, তার সঠিকতা বিচার হয় প্রয়োগের অভিজ্ঞতার মানদণ্ডে। সেই জন্য পার্টিকে সিদ্ধান্ত করে জনগণের মধ্যে নিয়ে যেতে হয় এবং সে সম্পর্কে প্রয়োগে তাঁদের মতামত ও অভিজ্ঞতা পার্টিকে অবহিত করতে হয়। পার্টির কাজ হল এই আদানপ্রদানের প্রক্রিয়ায় বোঝাপড়ায় কোনো ভুল থাকলে তাকে সংশোধন করা। এটা ঠিক না ওটা ঠিক তা নিয়ে কেবল অন্তহীন তাত্ত্বিক বিতর্কের আশ্রয় না নিয়ে সত্যে উপনীত হওয়ার জন্য জনগণের সঙ্গে অভিজ্ঞতার বিনিময়ই হল গণ-লাইনের মর্মবস্তু। 
পঞ্চমত, অব্যাহতি না দেওয়া হলে প্রত্যেককেই পার্টির পরিচালনাধীনে কোনও না কোন গণসংগঠনে কাজ করতে হবে। বলাবাহুল্য গণসংযোগ ও গণসংগ্রামগুলির মধ্য থেকেই গণসংগঠনগুলি গড়ে ওঠে ও শক্তিসঞ্চয় করে। এগুলিতে অংশগ্রহণ না করে কেউ পার্টি সদস্য হতে পারে না। পার্টি সদস্যরা পার্টির পরিচালনাধীনেই বিভিন্ন সংগঠনে কাজ করেন। কিন্তু তাঁরা ঐ সংগঠনের স্বাধীন গণতান্ত্রিক কর্মধারায় পার্টির তকমা লাগিয়ে অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ করতে পারেন না। গণ-লাইনের সঠিক প্রয়োগের মধ্য দিয়েই গণসংগঠনে নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে হয়। জনগণের আস্থা ছাড়া যোগ্যতা অর্জন করা যায় না।

বিপ্লবী পার্টি সম্পর্কে
‘বিপ্লব’ কথাটি সমাজব্যবস্থার মৌলিক পরিবর্তনের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে যুক্ত। এটা নিছক সরকার পরিবর্তনের ব্যাপার নয়। সমাজবিপ্লবই হল পৃথিবীর ইতিহাসে একটা সমাজব্যবস্থা থেকে উন্নততর সমাজব্যবস্থায় উত্তরণের চালিকাশক্তিভারতের সুনির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে বর্তমান আর্থসামাজিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে আমাদের পার্টি ১৯৬৪সালে ভারতে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রথম স্তর হিসেবে জনগণতান্ত্রিক বিপ্লবের কর্মসূচী গ্রহণ করেছিল। যা ২০০০সালে বিশ্ব ও জাতীয় পরিস্থিতির পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সময়োপযোগী করা হয়। ইতিহাসের অভিজ্ঞতায় এটা বারংবার প্রমাণিত হয়েছে যে বৈপ্লবিক পরিস্থিতি ও বিপ্লব সমাধার জন্য বিপ্লবী পার্টি এই দুইয়ের মধ্যে কোনও একটা উপাদানে ঘাটতি থাকলে বিপ্লব সংগঠিত করা অসম্ভব। আমাদের দেশে শ্রেণী ও সামাজিক এই উভয়বিধ বৈষম্য থেকে মুক্ত একটা সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলাই হল পার্টির লক্ষ্য। শ্রমিক কৃষক মধ্যবিত্ত ও অবৃহৎ জাতীয় পুঁজিপতি অংশকে জনগণতান্ত্রিক মোর্চায় সংগঠিত করার লক্ষ্যে রণনীতিগত লক্ষ্যে আপাত রণকৌশলগত লাইন হিসেবে একবিংশতিতম পার্টি কংগ্রেস এই শ্রেণীগুলিকে বাম ও গণতান্ত্রিক মোর্চায় সমবেত করার পাশাপাশি বামপন্থীসহ সমস্ত গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিগুলির ব্যপকতম মঞ্চে সংগঠিত করার আহ্বান জানিয়েছে। এই কর্তব্য সম্পাদনের জন্য কলকাতা প্লেনাম একটি শক্তিশালী কমিউনিস্ট পার্টি গড়ে তোলার ডাক দিয়েছে। একটা বিপ্লবী পার্টিতে নিষ্ক্রিয় ও অবাঞ্ছিত সদস্যদের কোন স্থান নেই। পার্টির বিপ্লবী চরিত্রের গুণগত মান পার্টির সংখ্যাগত বিকাশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ার পথে সব বাধাগুলি অতিক্রম করাই হল আসন্ন রাজ্য প্লেনামের অন্যতম মুখ্য আলোচ্য বিষয়। পার্টি সদস্য ও বিভিন্ন স্তরের নেতৃত্বের শ্রেণীগত সামাজিক বিন্যাস ও গড় বয়স পরিবর্তনের জন্য গণসংগ্রামের ময়দান থেকে বর্তমান পরিস্থিতির চাহিদা পূরণের উপযোগী অগ্রগামী অংশকে অন্তর্ভুক্তির ওপরে অগ্রাধিকার আরোপ করবে। গ্রাম ও শহরের শ্রমজীবী অংশ, মহিলা আদিবাসী, তপসিলী, সংখ্যালঘু ও অন্যান্য অনগ্রসর অংশের জনগণের মধ্য থেকে তরুণতর কর্মীদের নিয়ে আসা, মতাদর্শগত শিক্ষায় সমৃদ্ধ করা, রাজনৈতিক সাংগঠনিক নেতৃত্বদানে উপযোগী করে গড়ে তোলাই হল আমাদের সামনে প্রধান কাজ।
আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি প্রকৃত অর্থে শেষপর্যন্ত জনগণই ইতিহাস রচনা করেনদলত্যাগী আত্মসমর্পণকারীরা ইতিহাস গড়ে না, তাদের স্থান ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে। বিগত বিধানসভা নির্বাচনে যে ২কোটি ১৫লক্ষ মানুষ জীবন-জীবিকার ওপর সবরকম আক্রমণের ঝুঁকি অগ্রাহ্য করে তৃণমূল ও বিজেপি-র বিরুদ্ধে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন তাঁদের সমর্থনের ওপর ভিত্তি করে নতুন নতুন অংশকে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামে সমবেত করার ব্যপক সম্ভাবনা রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যেই নিহিত আছে। রাজ্যের রাজনৈতিক ভারসাম্য পরিবর্তনের জন্য সর্বব্যাপক গণসংগ্রাম গড়ে তোলার উপযোগী সাংগঠনিক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে রাজ্যে সাংগঠনিক প্লেনামকে নতুন প্রত্যয়সিদ্ধ শপথ গ্রহণের মঞ্চ হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা সক্ষম হব —এই আত্মবিশ্বাস আমাদের আছে।
******

গণশক্তি, ৩০শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬

No comments:

Post a Comment